করোনার জেরে
-----------------
করোনার জেরে আপন হয়েছে পর-
করোনার জেরে একাকীত্ব হল আপন,
করোনার জেরে প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসা ,
উবে গেছে সব, শোক করেছে আলিঙ্গন!
করোনার জেরে সব গেছে উড়ে-
মানুষে মানুষে জাতিভেদ দূরে,
রোগে শোকে তাপে পুড়ে-
একের পর এক হসপিটালে ঘুরে-
করোনার জেরে প্রেম অচছ্যুত,
করোনার জেরে ভক্তি আপ্লুত!
চলে গেছে সকল মানব প্রীতি-
এসে গেছে শুধু মানুষে ভীতি-
ভুলে গেছে সবাই বিবেক নীতি-
সম্পর্কের টেনেছে ইতি ।
করোনার জেরে স্বার্থের হয়েছে জয়-
এখনও রোগীকেই ঘৃণা করা হয়,
ডাক্তার, পুলিশ, নার্স এদের সাথে
সহযোগিতা কোন মতে ই নয়!
করোনার জেরে জিতে গেছে স্বার্থ-
করোনার জেরে হেরে গেছে অর্থ-
করোনার জেরে এসে গেছে কালোবাজারী-
করোনার জেরে হুজুগে মেতেছে গা-জোয়ারী ।।
মন ডুবুরি
-----------------
জল ডুবুরি যেমন করে মুক্তো-মাণিক তোলে-
মন ডুবুরি তেমন করেই প্রেমের অতলে,
ডুব দিয়ে সে মন খুঁজে নেয়-
প্রেমের গহীন মনন খাতায়-
সাঁতার না জানলে পরে
জলে হাবুডুবু খেতে হবে
নরখাদক কিংবা বিপদ সঙ্কুল,
প্রাণী তোমায় করবে নির্মূল-
প্রেমে ও যদি নকল মোতি কিংবা ভ্রান্ত মাণিক পাও,
জীবন তোমার হবে ছারখার, চাও বা না চাও-
পোড়া চামচ জলের মধ্যে বেশি চকচক করে-
অথচ চকচকে চামচ কে ম্লান লাগে জলের পরে!!
মুক্তো ভেবে শুক্তি খানি
দেখি যখন খুলে-
হাতের উপর কলাগাছ
হয়েছে আঙুল ফুলে!!!!
বিজিত বীর যোদ্ধা
-----------------
জীবনে অনেক কিছু করতে হবে,
লড়তে হবে, ছাড়তে হবে ভূমি-
জীবন যুদ্ধে জয়ী হলে
সবার হৃদয়ে তুমি!
যুদ্ধে যারা হেরে গেল,
হল না বিজয়ী-
কেউ ই তাদের রাখবে না মনে
নাম নেবে না কেউ ই ।
অথচ তারা ভুলেছে নিজের কথা-
ভুলেছে নিজ চাহিদা-
শোনেনি কেউ জীবন ব্যথা-
নাম করে নি কদা!
যাদের জন্য তৈরি হল
বিজয় সোপান খানি-
একবার ও কি চোখে তোমার
আসবে না কো পানি?
তাদের পদচিহ্ন রেখা
একটু পায়ের ধুলো,
পেতাম যদি একবার ও কেউ
ধন্য মানুষ গুলো!
তাদের সহায়তার তরে
সফল হল কাজ,
হেরে গিয়ে ও জিতে গেলেন
অমর হলেন আজ ।।
ফুল কি শুধু রূপেই সুন্দর?
ঐ তো ডাকে মৌমাছি আর ভ্রমর!
যাতে বাড়ে ভবিষ্যত গাছের কদর!
আর সুগন্ধে ভরিয়ে দেয় আমাদের অন্তর ।
ধূপ নিজেকে জ্বালিয়ে, নিজেকে শেষ করে,
সুগন্ধ বিলিয়ে যায় মনপ্রাণ ভরে-
মোমবাতি নিজেকে পুড়িয়ে, দেয় আমাদের আলো-
নিজেকে গলিয়ে সে ঘোচায় সকল কালো!
শামুক কে মেরে ফেলে, তার খোলস দিয়ে-
'শঙ্খ ' বাজে ঘরে ঘরে সন্ধ্যা বেলায় নিয়ে-
ঝিনুক মরে তার ভিতরে লুকোনো ঐ মুক্ত,
লক্ষ টাকার দামী রত্ন ভিতরে থাকে গুপ্ত-
লাক্ষা-গুটির ভিতর গুটি পোকাকে ধরে-
গরম জলে ফেলে মারি রেশমী সুতোর তরে!
রঙ বেরঙের ফল গুলো সব পাকা এবং কাঁচা ও-
উদরতুষ্টি ছাড়া ও যে বীজ নতুন গাছ বাঁচাও ।
আমরা কেবল মহান সৃষ্টি, শ্রেষ্ঠ নাকি জীব-
পরোপকারে পিছু হটে যাই, হৃদয়ে নাকি শিব!
কি করলাম এ জীবনে?কি ই বা দিলাম কাকে?
নিলাম শুধু ই দু'হাত ভরে, জীবন শূন্য আঁকে ।।
দৈনন্দিন জীবন মাঝে,
সারা সকাল,সারা সাঁঝে,
আবহাওয়ার এই স্বল্প তাপে
জীবন যেন কাজই মাপে ।
ছুটি কোথায় হারিয়ে গেছে,
ইঁদুর -দৌড় আর রেসের মাঝে!
জীবন শুধু এগিয়ে চলে,
আপন খেয়াল, আপন তালে,
দুঃখ-সুখের সুরের বোলে,
কোথায় গিয়ে ফেলবে নোঙর!
ফুরিয়ে এল সময় যে মোর-
দিনের শেষে শেষ প্রহরে,
কষ্ট রইলো নিজের করে,
সুখ পালালো একটু পরে-
আনন্দ টাও অনেক দূরে-
শান্তি কখন গেছে উড়ে-
'কষ্ট ' কিন্তু যায় নি ছেড়ে!!
ভিন্ন পুরুষ
-----------
বাবার কোলে হেসে খেলে,
আদরেতে মানুষ হলে,
ওই পুরুষ ই স্নেহ-ছায়া -
সাথে অনেক দয়া মায়া-
রক্ত ঘাম জল করে তোমায়
সকল প্রয়োজন মেটায়-
আরেক পুরুষ তাকিয়ে হাসে-
কখন ওড়না, আঁচল খসে!!
কখন একটু হাতের চাপে
নরম শরীর টাকে পেষে-
বাসে-ট্রামে ভিড়ের মাঝে-
সকাল দুপুর বিকেল সাঁঝে
আবার কখন আর এক দানব
মনটা পুরো নৃশংস জান্তব-
তোমার শরীরে অবাধ লীলা
যেমন খুশি চালায় যৌন খেলা!!
অন্য আর এক পুরুষ এসে
বাঁচায় তোমায় অবশেষে-
ভন্ড দানব ঐ শয়তান বেশি
যায় গুঁড়িয়ে তার পুরুষালি পেশী
রক্ষা করে আব্রু তোমার-
রাখে মান, সম্মান ও লজ্জার -
হাত ধরে সে ভবিষ্যতের
লাগায় মলম গভীর ক্ষতের,
সে ও তো এক পুরুষ ছিল-
আশা, ভরসা, যে সব দিল
নারী কে কেউ ছুঁড়ে ফেলে
আবর্জনার অন্তরালে,
কেউ বা তাকে তুলে এনে
প্রতিষ্ঠা করে পূজোর আসনে!!
পুরাণ বলে, দেবতা অথবা অসুর
দুই ই হয়েছে পুরুষ চারযুগে সুদূর
নারী রা কখনও হয়নি অসুর, হয়েছে দাসী,
হয়েছে দেবী, হয়েছে বীর, হয়েছে মহীয়সী ।।